পারমিতা আলমতোমার চিঠি হলুদ খামের সেই চিঠিটাকতোদিন ধরে পরে আছেহবে হয়তো পঁচিশ ত্রিশ বছর।জানো মিনু, এখন আর কেউ চিঠি লিখে না,মনের গহীন বালুচরের আবেগভরা চিঠি।চিঠির জায়গা দখল নিয়েছে ক্ষুদে বার্তা,ইমো হোয়াট্স অ্যাপ চ্যাট আরো কত কি।মনে পরে মিনু? একদিন চিঠি দেইনি...
সালাম তাসির ঘুম নিঃশ্বাস পুরোনো ছবি দেখে মনে হয়ই’েছ বিরুদ্ধ মৌন আকাশবরফ শীতল অধর ছুঁয়ে লাল বেনারশী বহু মিথ্যে সংলাপ; পুরোনো মনে আঁধার নীরবতা।পুরোনো পথে ভাটফুলশরীরের আবেদনে সন্ধ্যে গভীর হয়রাতের স্টেশনে বস্ত্রহীন মানুষ নির্ঘুম সারারাতট্রেনের কামরায় সহ¯্র চোখ নিষ্পলক চেয়ে থাকেআদিম অভ্যাসে।পুরোনো...
সুপান্থ মিজান কবিতার কবি ভেবে নিয়ো আমি তোমাদের কেহ নইনীলাকাশ হতে খসে পড়া ধ্রæবতারা।অনাদরে রাখা সোনালী ধানের খড় আগুনে আগুনে হয়ে যাই দিশেহারা। মনে করো আমি বেমালুম বেলাভূমি,জোয়ার-ভাটায় নিষ্ফল কোলাহল,অথবা বাতাসে উড়ে যায় কিছু ধুলিমোহনায় নদী অবিরত ফেলে জল। ভেবে নিয়ো আমি উদ্যানে সাদা...
এনাম রাজুস্বাধীনতার বিচিত্র খেলা ঐ পাড়ায় আজও নীলকর আইনভেঙে গেলে রোদে কাঁচ দিতে হয় ফাইনযাজকের ভান করে নীলমহাজনসুযোগে পকেটে ভরে জনগণ...!ওপারে রাখাল বাঁশি বাজে কি বেসুরঅথচ, নাবিক খোঁজে নির্বাচিত সুরেলা দুপুরচোখে পড়ে তিস্তার চরভরা ফসলের মাঠহাহাকারে ভেসে যায় ভাটিয়ালি ঠাট।ওপাড়ায় ঘটে...
আবু জাফর দিলুতবু বেঁচে আছি এখন আমার বুকে নেই সেই বিপুল সাহস,নিজ হাতে গোটা সংসার সাজাবার মতো শক্তি,হাতের মুঠোয় নেই লাঙল-জোয়াল জোড়া মাঠ;হাতুরী শাবল আর কাস্তের সুঠাম ভালোবাসাচোখে নেই সমুদ্দুর ছোঁয়া রঙিস স্বপ্নের নদী,যে নদী আমার পিতৃপুরুষের ভিটেমাটি চেনে।এখন আমাকে যেন...
শামসুল হক আজাদপলাতকা ছায়া দিন ও রাত খুব দ্রুত হেঁটে আসছে আমার দিকেআমার ডান হাতের তালুতে কয়েক লক্ষ আর্তচিৎকারপোয়াতি মেয়েটির খিঁচুনিথর থর করে কাঁপছে ডিটেনশন ক্যম্প।বাম পাঁজরের পাশ থেকে ধ্বসে যাচ্ছে দেশ,কোনো দেশের মাটিতে আমার ছায়া পড়ছে নাসূর্যের বন্দরে থেমেছে চিতা...
বাদল বিহারী চক্রবর্তী সরিয়ে দাও তোমার মেঘের আস্তরণ আমি অবাক হয়েছি বলেই বুঝি হাত গুটিয়ে বসে আছো,স্কচ্-ট্যাপ লাগিয়ে রেখেছো তোমার সুরম্য মুখশ্রীতে ?জানি, আমার এ অবাক বিস্ময়কে তুমি--ফ্যাসিবাদী ধমকের নামান্তর জেনে অভিমান করেমিছেমিছি বলছো আমায়, আমার এ মতাদর্শ আর লেখার রূপকল্প নাকি...
এ সপ্তাহের কবিতা খোদেজা মাহবুব আরাতপ্ত স্মৃতি গেছো মৌয়ালির ছেঁড়া বুক ফুরে বেরিয়ে এসেছে অর্ধেক হৃদপিন্ড বাকীটা বাঘের পেটে, স্মৃতিটা আজও দাপিয়ে বেড়ায় কঁচি বউটার উথাল পাতাল বুকে, যেন সদ্য তীক্ষè হিং¯্রতায় ফালি করে রাখা কোন অভুক্তের আহার, বহুদিন অনাহারের তীব্রতায় দন্ডিত...
মিজানুর রহমান তোতামাটির বোবা কান্না আমি কী শুধু দিতেই জন্মেছি এর উত্তর নেইপৃথিবীর সৃষ্টি থেকে দিয়েই যাচ্ছি আর যাচ্ছিসবাই আমাকে নির্বিচারে ব্যবহার করে চলেছেআমি অমূল্য সম্পদ মাটি।দ্রুত বদলে যাচ্ছে মাটি যত্নবানের দৃষ্টি নেইসৃষ্টিতে মাটি জীবনে মাটি মরণেও মাটি তবুও সেই মাটির...
আশুতোষ ভৌমিকচতুর্পদী গোধূলির ধূলিআর তোমার পদধূলিপাশাপাশি হাঁটে পথউড়ায় জলাঞ্জলি। বৃষ্টি হচ্ছে সৃষ্টি হচ্ছেজলভরা জঞ্জাল মহাকালে মহাকাশধূসরিমা উচ্ছাস। শোয়েব পাঠানকরতলগত ধেনুর পালে একটি রাখালএকটি রাখাল মেষের দলেযুক্তি করে দুই রাখালেএক মনিবের কথা-ই বলে আকাশনীলে একটি পাখিএকটি পাখি মাটির ঘরেইচ্ছে করি ধরবো পাখিঘুরে বেড়াই বনবাঁদারে জাফর পাঠানদোহাই তোমাদের দোহাই...
নিঃশব্দ আহামদতীর ভাঙা স্রোতকাঁদছি বর্ষায়,আবার কান্নার মতো ঘনপরিবেশ লুকোয় স্বাভাবিকতার প্রলেপে কোথাও ছলছল চোখ নেই সহানুভুতির আবেশদুঃসহ সময় এক তবু সুন্দর ,নির্বাণ প্রার্থনা জপে৷দ‚রবর্তী এক শহরে,ভিজছে ঘুমঘরশার্সি খুলে জলের ছাপ মুখময়বালিশ ভিজে যে জলে,তার দাগ চোখময়এভাবে জেগে থাকে দ‚রমুখে অপেক্ষা...
মিজানুর রহমান তোতা কবিতার নিখাঁদ ভালোবাসা জীবনছন্দ চিন্তার সম্ভার রূপ প্রেম ভালোবাসা বিস্তীর্ণ ভুবনে নীরবে নিভৃতে অনবদ্য রচয়িতারসবোধের ছবি।ক্লান্তিহীন দেহে নতুন স্বপ্নের বীজ বপনে মুগ্ধহৃদয়ের গহীনে প্রচন্ড নাড়া দেয় ক্ষণে ক্ষণেকবিতার প্রেম।রসের হাঁড়ি ভরে দেয় বোধ অবোধের নির্যাসকোথায় লুকিয়ে সারা শরীরে তোলে...
নিঃশব্দ আহামদ অবসন্ন দিনের কাছে আততায়ি বিকেল এই দীর্ঘ আলাপভেবে নিতে পারো কোনো পথচারিরযে পথভুলে ডেকে ছিলো কাছে,পাš’সখাতারপর অনেকটা দ‚র হেঁটেছিলামবিকীর্ণ পথ ধরে৷দলিত ঘাসের উপর রোদের আল্পনাসবুজ জীবন দ্যাখে দ্যাখে আরও অনতিদ‚রকুয়াশার ভেতর হেঁটে যেতে যেতে গুম হয়ে গেছি কবেআততায়ি ছিলো ঠিক...
রকি মাহমুদঅনামিকা মানবী অতলান্তিক ছুঁয়ে যাবো হৃদয়ের অণু-পরামাণুস্পর্শের সৌরভে পূর্ণ করে দেবো জীবনের অলিগলিওষ্ঠের স্পর্শে ঝরাবো শিশির শরীরের দুর্বাতেকুড়িয়ে নেবো শিশির সিক্ত রজনীগন্ধ্যার উন্মাতাল গন্ধমিশে যেতে চাই তোমার অনিন্দ্য শরীর সৌধেহতে চাই দ্রবণ ৪টি চোখের বিলাসী চাহনির ঝিলিকেপৌঁছে যেতে চাই সুখের...
ভবতোষ হালদারসুবর্ণগাঁও সুবর্ণ গাঁও তুমি আমায় কেন ডাকো!তুমি আমার আঁতুরঘরের মালন কাঁথা;পদ্মদীঘির মোহন মায়ায় ভুলিযে রাখো,নিশুত রাতের পরণকথার স্বপ্নগাঁথাতুমি আমার নতুন প্রেমের নতুন রাধা,মায়ের সাথি প্রথম দিনের প্রথম সখি,আমার দিদির পুষ্পবীথি প্রেমের গাঁথাআমার বাবার আশার স্বপন চখা-চখি।ছায়া নামে বাঁশ বাগানের দীর্ঘ...
রহমান মাজিদইচ্ছার সাবমেরিন অভাবের মরুভূমিতেআশার যে চারা রোপন করেছিল মাএখন তা অল্প ছায়া দানে সক্ষমযদিও তা উপরোতে বারবার উদ্যত হয়েছে আব্বার গরিবী হাতদূর নীলিমায় অস্পষ্ট আলোর ঝিলিকমিটি মিটি তারার আংশিক ক্ষীণ শিখাসূর্যের দীপ্তি হয়ে ধরা পড়েছিল এই গ্রামীণ গৃহিনীর স্বপ্নীল চোখেতাই...
সুমন আমীনপ্রত্যয়ন জাগতিক সুখ খুঁজি তোমার ভেতরহাহাকার ফণা তোলে মরণ নেশায়নাটকের দৃশ্যপটে সংলাপ হারায়রাতের নির্জনে তাই জোছনা মেশায়।আমিও পুড়েছি কভু বেদনার নীলেরঙীন জীবন খুঁজে প্রেমিকার তিলেজুঁই ফুল পায়ে ঠেলে বিষ ফুল নিলে?জমিনের বুকে যত-দিন বেঁচে আছিলিখে নিও তুমি আমি রবো কাছাকাছি। বিশ্বজিৎ...
আলম মাহবুববৈশাখী ঝড় বসন্ত বিলাসে আর মন টানে নাফাগুনের কাব্য যখন হাহাকারের ঢেউ তুলেএকটাও পাখি পরেনা পাতার মুকুটআড়ালে থেকে সুবেশী কেউ নাচালে পুতুলকী যে বেমানান লাগে বৃক্ষের সবুজহেভী ফাউন্ডেশনে আহামরি কৃত্রিম মেকাপেঢেকে রাখা রাত্রির অন্ধকারবিসম দৃশ্যগুলি ছলনার প্যারডি গায়। দীর্ঘ পারাবারে...
রকি মাহমুদ মানব কল্যাণের শোভিত উদ্যান একটি জাতি সুদীর্ঘ প্রাগৈতিহাসিক কাল অধ্যয়নের সোনালী ফসলমানুষের দু›টি পরিচয় একটি নিঃসঙ্গ মৌলিক; অপরটি নির্মোহ রাষ্ট্রীয়।সভ্যতা এখোন অগ্রসরমান উত্তরাধুনিকতার রৌদ্রালোকিত প্রান্তরেকারণ, যার স্বপ্ন নেই তার অন্তর কালোরাতের বিপন্ন বদ্ধভূমিআর পাথর হৃদয়ের কাছে সুন্দর কিম্বা আলো-আধার মূল্যহীন।দৃষ্টিভঙ্গীর...
মোহাম্মদ আবুল হোসেন ছন্দে ছন্দে বর্ণবোধ গাইতে গেলে গান যেমন ‘সা-রে-গা-মা’ শিখতে হয়,ভাষাবোধেও লাগে তেমন সঠিক বর্ণ-পরিচয় ।বাংলা ভাষায় পঞ্চাশটি আছে সরল বর্ণ,এগারোটি স¡রবর্ণ, বাকি ব্যঞ্জনবর্ণ! এর বাইরেও, আরো-কিছু যুক্তবর্ণ পাইজ্জজানতে হবে সঠিকভাবে তাদের পরিচয় । ‘অঙ্গ, বঙ্গ, রঙ্গে’ আছে যুুক্তবর্ণ ‘ঙগ’(উঁয়ো-গ), ‘রঞ্জন’...
মিজানুর রহমান তোতা হৃদয়ে রক্তক্ষরণ অবিরত শেষ কথাটি বলা হলো নাঘুমের কোলে চোখ বন্ধহঠাত পাথর হয়ে গেলেআর চোখের পাতা মেললেনা, বললে না ওগো এটা করোওটা করো না।নাহ মোটেও মানতে পারছি নাকঠিন সত্যের মুথোমুখি হয়েএভাবে হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হবেআকস্মিক ভাবতে পারিনি, যেদিকেত্কাায় ভেসে ওঠে...
টিপু সুলতানপায়চারি জলের শরীরে শীতল জ্বর।আদিগন্ত বিলের শেওলা ডগায় ওড়ে বালিহাঁস-ঘনবন গাছের দেওয়াল বাঁধানো শামুক সারির মতসংগীত ভাঙে বীজ ছিটানো মাঠ; একটি বালক দুটি হাতে তালি ওড়ায়।ঝরাপাতার শরীরে শিশির বিছানো চাদরবুড়ো বৃক্ষবকুল মুড়ো রূপে সময়ের সাজঘরে-পুকুর পাড়ে ধূসর বেজী মুখ উচায়নববধুর উঠানে...
রহমান মাজিদআশার কবুতর সাইবেরিয়ার বিস্তীর্ণ জলাভূমিতে রুয়ে দেয়া আমার ভাবনার দানাগুলো তরতর করে বেড়ে উঠে মাথা উচিয়ে রেখেছে পানির উপরে ভাসমান আমন ধানের শীশের মতচলনবিলের মত প্রসারিত দৃষ্টির সীমা বিছায়ে দিয়েছি বঙ্গপোসাগরের উপর যা উচুনিচু ঢেউয়ের তুলে পৌছে গিয়েছেতার উৎপত্তি¯’ল হিমালয়ের...
পারভীন রেজা স্বাধীনতা আসে শিমুল ঝরার পরে স্বাধীনতা আসে লাল ফুল সবহারিয়ে যাবার সাথে। স্বাধীনতা আসে কবিতার পলে পলে।স্বাধীনতা আসে,প্রেমিকার স্বপ্নীল আঁখি জুড়েতপ্ত বুকের শীলত পাটি হয়ে,রোদে ঝলসানো পৃথিবীল বুকেসাদা মেঘের বৃষ্টিাধারা লয়েস্বাধীনতা আসে, আহত বাবারউপহার হয়ে, অন্ধ মায়েরদৃষ্টি দেবার দৃঢ় শপথেস্বাধীনতা আসে...